বোমা হামলার চার বছর
![]() |
| প্রদীপ নিয়ে প্রদক্ষিণ |
আজ ২১ শে এপ্রিল। শ্রীলঙ্কার
ইতিহাসে এক বেদনা-বিধুর দিন। আজ থেকে ৪ বছর আগে ২০১৯ সালের ২১শে এপ্রিল ইস্টার সানডে
শ্রীলঙ্কার ৩টি গির্জা ও ৩ টি পাঁচতাঁরা হোটেলে আত্মঘাতী সিরিজ বোমা হামলা চালানো হয়েছিল।
গির্জাগুলোতে তখন চলছিল পুনুরুত্থান রবিবারের বিশেষ প্রার্থনা অনুষ্ঠান।
হামলায় ২৭২ জন নিহত এবং পাঁচ
শতাধিকের বেশি আহত হয়। নিহতদের ৪৫ জন বিদেশি নাগরিক, ৩ জন পুলিশ।
ইস্টার সানডের প্রার্থনা অনুষ্ঠান
চলাকালে সকাল ঠিক ৮ টা ৪৫ মিনিটে নিগাম্বোর সেন্ট সেবাস্তিয়ানের গির্জা, বাত্তিকালয়ার
খ্রিষ্টিয়ান চার্চ জিয়ন এবং কলম্বোর কচ্চিকাডে
সাধু আন্তনির তীর্থে একযোগে আত্মঘাতি হামলা চালান হয়। এছাড়া কলম্বোর সাংগ্রি-লা, সিনামন
গার্ডেন এবং কিংসব্যারি পাঁচতাঁরা হোটেলে আত্মঘাতী বোমা বিস্ফোরিত হয়। আই এস আই এস
এসব বোমা হামলার দায়িত্ব স্বীকার করেছে।
আজ সকালে শ্রীলঙ্কার প্রত্যেকটি
গির্জায় বোমা হামলায় নিহতদের স্মরণে বিশেষ খ্রিষ্টযাগ উৎস্বর্গ করা হয়।
অন্যদিকে গতকাল সন্ধ্যা থেকে
শ্রীলঙ্কার ক্যাথলিক ধর্মাবলম্বীরা ও ধর্মীয় নেতারা নিগাম্বোর সেন্ট সেবাস্তিয়ান গির্জা
থেকে পায়ে হেঁটে জ্বলন্ত মোমবাতি নিয়ে কলম্বোর কচ্চিকাডে সেন্ট আন্তনির গির্জায় প্রদক্ষিণ
শুরু করে। সারারাত প্রদক্ষিণ শেষে আজ সকালে সাধু আন্তনির গির্জায় উপস্থিত হয়ে স্থানীয়
সময় ঠিক ৮ টা ৪৫ মিনিটে হামলায় নিহতদের স্মরণে ২ মিনিট নিরবতা পালন করে। ঠিক একই সময়ে
শ্রীলঙ্কার প্রত্যেকটি গির্জায় ঘণ্টা বাজানো হয় এবং দেশের প্রত্যেকটি খ্রিষ্টভক্ত নিরবতা
পালন করে।
![]() |
| শ্রীলঙ্কায় বোমা হামলা |
এরপর শুরু হয় স্মরণ সভা। সভায় উপস্থিত ছিলেন শ্রীলঙ্কার ক্যাথলিকদের সর্বচ্চো ধর্মীয় নেতা ম্যালকাম কার্ডিনাল রাঞ্জিত, শ্রীলঙ্কায় অবস্থিত পোপের প্রতিনিধি, দেশের খ্রিষ্টান, বৌদ্ধ, হিন্দু ও মুসলিম ধর্মের প্রতিনিধিগণ, বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূতগণ, হতাহতদের পরিবারের সদস্যগণ এবং সাধারণ খ্রিষ্টভক্তগণ। সভার শুরুতে অনুষ্ঠানে উপস্থিত বিশেষ অতিথিগণ নিহতদের প্রতিকৃতির সামনে তাদের আত্মার কল্যাণে বাতি প্রজ্বলন করেন।
স্মরণসভায় বোমা হামলার সুষ্ঠু
তদন্ত ও হামলায় জরিতদের দ্রুত বিচারের দাবি
জানান হয়। বোমা হামলার তদন্ত ধীর গতিতে হচ্ছে এবং অপরাধীরা ক্ষমতাসীনদের ছত্রছায়ায় আছে বলে অভিযোগ করা হয়।
এছাড়া আহতদের দ্রুত সুস্থতা
কামনা করা হয় এবং নিহতদের পরিবারের সদস্যদের সমবেদনা জানান হয়।
হামলার প্রতিবাদস্বরূপ দেশের
প্রত্যেকটি গির্জায় আজ কালো পতাকা উত্তোলন করা হয়েছে। এছাড়া প্রত্যেকটি খ্রিষ্টান বাড়িতে
কালো পতাকা উত্তোলন করার আহব্বান জানানো হয়েছে।
উল্লেখ্য, বোমা হামলার পূর্বাভাস
পাওয়ার পরও তৎকালীন সরকার নিরাপত্তার বিষয়ে জোর দেয়নি এবং সরকারের স্বদিচ্ছার অভাবে
হামলায় জড়িতদের বিচারকাজ বিলম্ব হচ্ছে বলে শ্রীলঙ্কার ক্যাথলিক মণ্ডলী অভিযোগ করে আসছে।
আরও পড়তে ক্লিক করুন




No comments